সারদা সুন্দরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ফরিদপুর -এর স্থাপন কালের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি।
ফরিদপুর শহরের প্রবেশ দ্বার গোয়ালচামটে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী সারদা সুন্দরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় নারী শিক্ষা বিস্তারে ফরিদপুর জেলার অগ্রগণ্য প্রতিষ্ঠান। বিদ্যালয়টি ১ জানুয়ারী/১৯৭৬ সালে ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত মাত্র ২৯ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল। বিদ্যালয়ের বর্তমান স্থানে সমাজ সেবক, শিক্ষানুরাগী বাবু চন্দ্রকান্ত নাথ তাঁর মাতা সারদা সুন্দরী দেবীর নামে ১৯৬৬ সালে সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে শহরের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের ইচ্ছায় মেয়েদের যাতায়াতের সুবিধার্থে ১৯৬৯ সালে কলেজটি ঝিলটুলী, ফরিদপুর -এ স্থানান্তরিত হয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে রাজাকার বাহিনীর হাতে চন্দ্রকান্ত নাথ বাবু নির্মমভাবে নিহত হন। ১৯৭৬ সালের কতিপয় শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিবর্গের সহযোগিতায় সারদা সুন্দরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয় যার মধ্যে মরহুম জনাব আব্দুল হাকিম মোল্যা সাবেক চেয়ারম্যান ফরিদপুর পৌরসভা, সাবেক জেলা প্রশাসক জনাব আব্দুল মুরীদ চৌধুরী, নিমাই বাবু, জনাব শামসুল হক সাহেবের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ১৯৭৫ সালে তৎকালীন তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মানিত উপদেষ্টা জনাব আকবর কবির সাহেবের সহযোগীতায় বিদ্যালয়টি প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতী লাভ করে। ১৯৭৭-৭৮ সালে ৯ম ও ১০ম শ্রেণি খোলা হয়। অতি অল্প সময়ের মধ্যে ভৌত অবকাঠামোগত উন্নয়নের সাথে সাথে শিক্ষার মান উন্নয়নে বিদ্যালয়টি আশাতীত সাফল্য অর্জন করে। ১৯৯৫ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা লাভ করে এবং তৎকালীন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান শিক্ষক জনাব শাহাজাদী বেগম পুরষ্কার গ্রহণ করেন। ১৯৮৮ সালে তৎকালীন মহামান্য রাষ্ট্রপতি একাডেমিক সমস্যা সমাধানে এক লক্ষ টাকা অনুদান প্রদান করেন। একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি সহপাঠক্রমিক কার্যাবলীতে থানা, জেলা, বিভাগীয়, আঞ্চলিক ও জাতীয় পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা অসামান্য সাফল্য লাভ করে। বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ফরিদপুর জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন সময়ে কর্মরত জেলা প্রশাসক মহোদয়গণ সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে বিদ্যালয়ের মান উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখেছেন। বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি ও মাননীয় জেলা প্রশাসক জনাব উম্মে সালমা তানজিয়া বিদ্যালয়ের পুরাতন বিপনী বিতান অপসারণ করে তিন তলা বিশিষ্ট বিপনী বিতান নির্মানের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। বর্তমান সভাপতি ও মাননীয় জেলা প্রশাসন জনাব অতুল সরকার নতুন বিপনী বিতান ও সুদৃশ্য গেইট নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেন এবং শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক নির্মিত চার তলা ভরনের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্ভোধন করেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান উন্নয়নে তিনি অসামান্য অবদান রেখে চলেছেন। বিদ্যালয়ের দক্ষ ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকগণ শিক্ষার্থীদের স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাসী, জ্ঞান, দক্ষতা, দূরদৃষ্টি সম্পন্ন, সংবেদনশীল, অভিযোজন-সক্ষম, মানবিক এবং যোগ্য বিশ্বনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
বর্তমান ছাত্রী সংখ্যা, শ্রেণি কক্ষ ও কার্যক্রমঃ
বর্তমান বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেণি পর্যন্ত প্রভাতি ও দিবা শাখায় মোট ১৪৪৫ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত আছে। বিদ্যালয়ে মোট ৯টি শ্রেণি শাখা রয়েছে। ১৮টি শ্রেণিকক্ষ, শিক্ষক মিলনায়তন, অফিসকক্ষ, প্রধান শিক্ষকের অফিস কক্ষ, লাইব্রেরী ও একটি বিজ্ঞানাগার রয়েছে। এছাড়া শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক চার তলা ভবন নির্মানাধীন রয়েছে। বিদ্যালয়ে মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা ও বিজ্ঞান বিভাগ চালু আছে।
শিক্ষক - কর্মচারী তথ্যঃ
এম পি ও নন এপ পি ও মোট
শিক্ষক ১৯ জন ১২ জন ৩১ জন
কর্মচারী ০৫ জন ০৬ জন ১১ জন